দুবাই থেকে অল্প সময়ের জন্য কোথাও ঘুরে আসার কথা ভাবছো? ভাবো তো, আকাশছোঁয়া বাড়ির বদলে দেখছো পাহাড় নেমে এসেছে সমুদ্রে, আর সেটাও কিনা এক ঘণ্টারও কম বিমানযাত্রায়। তোমাকে স্বাগত মাস্কাটে, ওমানের মনোমুগ্ধকর রাজধানী । এটা যেন একরাশ তাজা, খাঁটি আরবীয় বাতাস, যেখানে ঐতিহ্য আর প্রকৃতি মিলেমিশে একাকার । অবিরাম কোলাহল ভুলে যাও; মাস্কাট তোমাকে দেবে নিচু সাদা বাড়ি আর প্রাচীন ঐতিহ্যের এক শান্ত, স্নিগ্ধ পরিবেশ । মাস্কাটে একটা দারুণ সপ্তাহান্ত কাটানোর জন্য সেরা জায়গা, খাবার আর অভিজ্ঞতার চাবিকাঠি হলো এই গাইড। সপ্তাহান্তের ছুটি কাটাতে মাস্কাট কেন বেছে নেবে?
তাহলে, কেন মাস্কাটে যাবে? প্রথমত, দুবাই থেকে এটা খুবই কাছে আর সহজেই পৌঁছানো যায় – সত্যি বলতে, প্লেনে যেতে এক ঘণ্টারও কম সময় লাগে । এখানে তুমি পাবে আরবীয় সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের আসল স্বাদ, যা এর প্রতিবেশী দেশের অতি-আধুনিক পরিবেশ থেকে একদম আলাদা । চোখ বন্ধ করে ভাবো: বিশাল আল হাজার পর্বতমালা যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছে ফিরোজা রঙের ওমান উপসাগরে । এছাড়াও, মাস্কাটের অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী ঐতিহ্যবাহী ওমানি নকশার সাথে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার এক চমৎকার মিশ্রণ ঘটিয়েছে, যা এক স্বতন্ত্র পরিবেশ তৈরি করে । এটা সহজলভ্য অথচ আকর্ষণীয় এক দারুণ সমন্বয়। মাস্কাটের অবশ্য দ্রষ্টব্য স্থান: ওমানি ঐতিহ্যের প্রতীক
মাস্কাট জুড়ে ছড়িয়ে আছে এমন সব দর্শনীয় স্থান, যা ওমানের সমৃদ্ধ অতীত আর প্রাণবন্ত বর্তমানের গল্প বলে । এই প্রতীকী স্থানগুলো তুমি কোনোভাবেই বাদ দিতে পারো না। সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ: স্থাপত্যের বিস্ময়
সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ দেখে অবাক হওয়ার জন্য তৈরি হও, এটি সমসাময়িক ইসলামিক স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন এবং ওমানের বৃহত্তম মসজিদ । ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে নির্মিত এই মসজিদে একসাথে ২০,০০০ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন । এর ৫০ মিটার উঁচু বিশাল কেন্দ্রীয় গম্বুজ আর পাঁচটি সুউচ্চ মিনারের দিকে তাকালে চোখ জুড়িয়ে যায় । ভেতরে দেখতে পাবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাতে বোনা পারস্য গালিচা এবং চোখ ধাঁধানো Swarovski ক্রিস্টাল ঝাড়বাতি । অমুসলিমরা শনি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এখানে যেতে পারবে – শান্ত পরিবেশে ঘোরার জন্য একটু সকাল সকাল যেও । পোশাকের কঠোর নিয়ম মনে রেখো: পুরুষদের জন্য লম্বা প্যান্ট ও শার্ট, আর মহিলাদের চুল, কবজি পর্যন্ত হাত এবং গোড়ালি পর্যন্ত পা ঢিলেঢালা পোশাকে ঢাকতে হবে । প্রবেশমূল্য নেই । মুত্রাহ সুক: রত্নভাণ্ডারের গোলকধাঁধা
মুত্রাহ সুকে গিয়ে যেন অতীতে হারিয়ে যাবে, এটি আরব বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বাজার, যা মনোরম মুত্রাহ কর্নিশের পাশে অবস্থিত । স্থানীয়ভাবে এটি আল ধালাম সুক ("অন্ধকারের বাজার") নামে পরিচিত, এর আঁকাবাঁকা, ছাদঢাকা গলিগুলো বিশেষ করে সন্ধ্যায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে । লোবান, মশলা আর সুগন্ধির মনমাতানো ঘ্রাণ অনুসরণ করে এগিয়ে যাও । এখানে তুমি ওমানি রুপা, খানজার (ছোরা), মশলা, টেক্সটাইল এবং উচ্চমানের লোবানের মতো মূল্যবান জিনিস খুঁজে পাবে । গোল্ড সুক অংশটিও দেখতে ভুলো না । সুক সাধারণত সকালে এবং শেষ বিকেলে খোলে (শুক্রবার সকালে বন্ধ থাকে) । দর কষাকষি করাটাই এখানে রীতি, তাই মজা করে দরদাম করো, আর সাথে ওমানি রিয়াল রেখো কারণ নগদ টাকাই বেশি পছন্দ করা হয় ।